ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে জানুন

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে

যদি ভোটার আইডি কার্ডে ভুল থাকে এবং সংশোধন করার দরকার হয় তাহলে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে সেই চিন্তা করে সময় নষ্ট না করে উপযুক্ত কাগজপত্রসহ আবেদন করে ফেলা উচিত। আমি এই পোষ্টের Nid Card সংশোধন করতে কত দিন লাগবে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে চলেছি। কিন্ত কোন ব্যক্তি আপনার কাজ কতদিনে করে দেবে সেটা কেবল সেই ব্যক্তিই বলতে পারবে। আমরা যারা পরামর্শমূল পোষ্ট শেয়ার করি তারা তো শুধু খাতা কলমে যে তথ্য রয়েছে সেটিই তুলে ধরার চেষ্টা করি। কিন্ত বাস্তবে কি ঘটে সে বিষয়ে আপনারা যথেষ্ট ভালো বোঝেন। তাই নতুন করে সে বিষয়ে না বলি। 

নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন হতে কত দিন লাগার কথা সেটা আমি অবশ্যই উল্লেখ করবো। তবে সেই সময়ের মধ্যে যে সংশোধন হবেই তার কোন গ্যারান্টি দেয়া সম্ভব না। তাছাড়া আপনার ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগবে, সেটা নির্ভর করবে আবেদনের সাথে জমা দেয়া কাগজপত্রের উপর। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক Nid সংশোধন করতে কত সময় লাগে-

Table of Contents

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন

যখন কোন ব্যক্তি অনলাইনে অথবা অফিসে গিয়ে আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য আবেদন করে। তখন আবেদনটি চলে যায় এনআইডির হেড অফিসে। সেখান থেকে আবেদনের জটিলতার উপর ভিত্তিতে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়। আবেদনের ক্যাটাগরি পড়া মানে ওই আবেদনটি কোন অফিসারের দায়িত্বে থাকবে সেটা নির্দিষ্ট হওয়া।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের ক্যাটাগরি হচ্ছে ৪ টি। "ক" ক্যাটাগরি, "খ" ক্যাটাগরি, "গ" ক্যাটাগরি এবং "ঘ" ক্যাটাগরি। "ক" ক্যাটাগরির আবেদন থাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের দায়িত্বে।

"খ" ক্যাটাগরির আবেদন থাকে জেলা নির্বাচন অফিসারের দায়িত্বে। "গ" ক্যাটাগরির আবেদন থাকে আঞ্চলিক/বিভাগীয় নির্বাচন অফিসারের দায়িত্বে এবং "ঘ" ক্যাটাগরির কাজ হয় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ থেকে। 

এখন আসুন জেনে নেই কোন ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধনের হতে কত দিন সময় লাগে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে

নিয়ম অনুযায়ী ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে ৭ দিন থেকে শুরু করে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগার কথা। তবে এই সময়ের মধ্যে কিছু কিছু ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধন হলেও বড় ধরণের ভুল থাকা আবেদনগুলো সংশোধন হয় না।

সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী "ক" ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধন হতে সময় লাগে ৭ দিন । "খ" ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধন হতে ১৫ দিন সময় লাগে। "গ" ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধন হতে ৩০ দিন সময় লাগে এবং "ঘ" ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধন হতে ৪৫ দিন সময় লাগে। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ক ক্যাটাগরি

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, "ক" ক্যাটাগরির আবেদনগুলোতে খুবই সাধারণ বা ছোট খাটো ভুল হয়। তাই ৭ দিন অথবা কখনো কখনো তার আগেই সংশোধন হয়ে যায়। যদি আইডি কার্ডে নিম্নোক্ত তথ্যের এক বা একাধিক ভুল হয় তাহলে সে আবেদন "ক" ক্যাটাগরিতে আসে-

  • নামের আগে থাকা মোঃ/মোছাঃ সংশোধন বা পরিবর্তন
  • নামের পদবী সংশোধন
  • নামের বানান ভুল
  • ৩ বছর পর্যন্ত জন্ম তারিখ পরিবর্তন
  • বৈবাহিক অবস্থা পরিবর্তন
  • স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন
  • মোবাইল নম্বর পরিবর্তন
  • জন্ম সনদের নম্বর পরিবর্তন
  • ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর সংশোধন বা সংযোজন
  • পাসপোর্ট নম্বর সংশোধন বা সংযোজন
  • র'ক্তের গ্রুপ সংযোজন বা সংশোধন ইত্যাদি

আইডি কার্ডে এই ধরণের সাধারণ ভুল হলে সেগুলো স্বল্প সময়ে সংশোধন হয়ে যায়। তবে কখনো কখনো সময়ের ব্যবধান হতে পরে। কারণ অফিসারগণ কখন কোন অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সেটা বলা যায় না। যদি অতীব জরুরী কোন কাজ চলে আসে তখন দেখা যায় ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার কাজ পিছিয়ে পড়ে। 

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন খ ক্যাটাগরি

"খ" ক্যাটাগরির আবেদন জেলা নির্বাচন অফিসারের দায়িত্বে থাকে। একটি জেলায় যতগুলো উপজেলা রয়েছে সেই সকল উপজেলার সাধারণের তুলনায় জটিল আবেদনগুলো জেলা অফিসে চলে আসে। যেমন-

  • নামের পদবী পরিবর্তন
  • স্বামী/স্ত্রীর নাম সংশোধন
  • ৫ বছর পর্যন্ত জন্ম তারিখ সংশোধন
  • আইডি কার্ডের ছবি ও স্বাক্ষর পরিবর্তন
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশোধন
  • ধর্ম পরিবর্তন
  • প্রতিবন্ধীতা বা অসমর্থতার তথ্য সংশোধন ইত্যাদি।

ভোটার আইডি কার্ডের এই সকল তথ্যগুলো সংশোধন করার দায়িত্ব জেলা নির্বাচন অফিসারকে দেয়া হয়েছে। আর জেলার সকল উপজেলা থেকে এই ধরণের আবেদন "খ" ক্যাটাগরিতে আসার ফলে "খ" ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধন করতে ১৫ দিন সময় ধরা হয়েছে। তবে কখনো কখনো আবেদন নিষ্পত্তিকরণের জন্য তদন্ত করার প্রয়োজন হয় তাই সময় কিছুটা কম বেশি লাগতে পারে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন গ ক্যাটাগরি

সব থেকে জটিল প্রকৃতির আবেদনগুলো "গ" ক্যাটাগরিতে আসে। "গ" ক্যাটাগরি আবেদন আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসারের দায়িত্বে থাকে। "গ" ক্যাটাগরির আবেদনের মাধ্যে-

  • সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন
  • পিতা মাতার সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন
  • ৫ বছরের অধিক জন্ম তারিখ পরিবর্তন ইত্যাদি

একটি বিভাগের যতগুলো উপজেলা রয়েছে সে সকল উপজেলা থেকে জটিল জটিল আবেদন আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে অর্থাৎ "গ" ক্যাটাগরিতে আসে। ফলে আবেদনের পরিমাণ এবং জটিলতার কারণে "গ" ক্যাটাগরির আবেদন সংশোধন করতে ৩০ দিন সময় লাগে। তবে তবে কখনো কখনো দেখা যায় কিছু কিছু আবেদন মাসের পর মাস বছরের পর বছর ধরে পেন্ডিং অবস্থায় থাকে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ঘ ক্যাটাগরি

"ঘ" ক্যাটাগরিতে সাধারণত জটিল থেকে জটিলতর আবেদন পড়ে। আবেদনে চাহিত তথ্য সন্দেহজনক হলে সেই আবেদনগুলো এনআইডি উইং এ থাকে। এ সকল আবেদনের মধ্যে যেমন-

  • সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন
  • জন্ম তারিখ পরিবর্তন ইত্যাদি।

তবে এ সকল আবেদন অন্যান্য কাটাগরির আবেদনের তুলনায় ভিন্ন। কিছু মানুষ অসৎ সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য আইডি কার্ডের তথ্যে অস্বাভাবিক পরিবর্তন চেয়ে আবেদন করে থাকে। ফলে এই সকল আবেদন "ঘ" ক্যাটাগরিতে পড়ে এবং সংশোধন হতে ৪৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। 

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন অফিসে গিয়ে করেন আর অনলাইনে করেন বিষয় একই। কেউ আবেদন করলে সেটি প্রথমে ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয় তারপর বিভিন্ন অফিসে প্রেরণ করা হয়। অফিসে দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার সেই সকল আবেদনগুলো নিষ্পত্তি করে থাকেন। 

তাই বলা যায় যে, অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে এবং অফিসে গিয়ে আবেদন করে সংশোধন করতে একই সময় লাগে। সংশোধনের আবেদন করার দুইটা উপায় থাকলেও সংশোধন হওয়ার সময়ের ক্ষেত্রে কোন ভিন্নতা নেই। 

তবে একটি বিষয় লক্ষ্য করা যায় যে, অনলাইনে সংশোধনের আবেদন করলে সাথে সাথে সেই আবেদন হেড অফিসে পৌচ্ছে যায়। আর অফিসে আবেদন করলে আবেদনটিতে অফিসার সই করার পর সেটি ম্যানুয়ালী এনআইডি'র সার্ভারে এন্ট্রি করা হয়। ফলে আবেদনের কার্যক্রম শুরু হতে ১-২ দিন সময় লেগে যায়।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হতে সময় বেশি লাগার করাণ

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অধিনস্ত অফিসগুলোতে শুধু এনআইডি সংক্রান্ত কাজ হয় এমনটা না। বিভিন্ন নির্বাচন, উপ-নির্বাচন সব সময় লেগেই থাকে। তাছাড়া দৈনন্দিনের অফিসিয়াল আরো কার্যক্রম রয়েছে সেগুলো করতে হয়। 

কোন নির্বাচনী এলাকায় যদি নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা হয় তাহলে সেই এলাকার অফিসগুলো বাকী সকল কাজকে একদিকে রেখে নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কারণ নির্বাচনের কাজ সব সময় অতবী জরুরী হিসেবে ধরা হয়। তাই এই সকল কারণে কখনো কখনো ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হতে সময় বেশি লেগে যায়। 

পরিশেষে

পরিশেষে বলা যায় যে, ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হতে যে সময় নির্ধারিত হয়েছে কখনো কখনো সেই সময়ের আগেই সংশোধন হয়ে যায়। আবার কখনো কখনো তার থেকেও অনেক বেশি সময় লেগে যায়। তাই এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কখনোই বলা সম্ভব না কত দিন লাগবে। যদি ভোটার আইডি কার্ডে ভুল থাকে তাহলে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে। যদি বেশি জরুরী হয় তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত আবেদন নিষ্পত্তি করে দেয়ার জন্য অনুরোধ করা যেতে পারে। 

এই ছিলো ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন হতে কত দিন লাগে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করবেন। আপনাদের সকলের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করবো। আর লেখাটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার  করবেন। ধন্যবাদ..!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন