নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন ফরম পূরণ করে প্রত্যয়ন পত্র ব্যতীত অন্যান্য কাগজপত্রসহ অফিসে জমা দিতে গেলে বলা হয় প্রত্যয়ন পত্র লাগবে। ভোটার হওয়ার যোগ্য প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র জমা দিতে হয়। কোথায় পাওয়া যায় এই প্রত্যয়ন পত্র? কিংবা নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম কি জানেন? যদি না জেনে থাকে তাহলে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়তে থাকুন। তাহলে সঠিকভাবে নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম জানতে পারবেন।

এ কথা সত্যি যে, আপনি যেভাবেই নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লিখে অফিসে জমা দেন না কেন। অফিস থেকে সেটা নিয়ে তেমন কোন সমস্যা করে না। শুধু এটাই দেখে যে প্রত্যয়ন পত্র জমা দিয়েছেন কি না। কিন্ত যেমন তেমন করে একটি প্রত্যয়ন পত্র লিখে জমা দেয়া কোন সচেতন নাগরিকের উচিত না। তাই নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রত্যয়ন পত্র লেখার সময় কি কি কথা উল্লেখ থাকা উচিত সে বিসয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে চলেছি। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক-

Table of Contents

নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র কোথায় পাবেন

নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রত্যয়ন পত্র দরকার হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধির নিকট থেকে নিতে হবে। যেমন- পৌরসভা মেয়র অথবা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ওয়ার্ড মেম্বর/কাউন্সিলর, মহিলা ওয়ার্ড মেম্বর/কাউন্সিলর ইত্যাদি।

তবে খুব সহজে যদি নিতে চান তাহলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বর/কাউন্সিলরের নিকট থাকে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে নিজে বা কম্পিউটারের দোকান থেকে একটি প্রত্যয়ন পত্র টাইপ করে নিতে হবে। তারপর সেখানে জনপ্রতিনিধিকে দিয়ে স্বাক্ষর করাতে হবে।

আপনি চাইলে সংশ্লিষ্ট পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনের মেয়র কিংবা ইউপি চেয়ারম্যানের অফিসে গিয়ে তাদের নামীয় প্যাডের উপর প্রত্যয়ন পত্রটি লিখে নিতে পারেন। তারপর তাদের স্বাক্ষর ও সীল সংগ্রহ করতে পারেন। 

আর সেটা যদি না করতে চান তাহলে সাদা কাগজে প্রত্যয়ন পত্র লিখে এলাকার মেম্বর/কাউন্সিলরকে দিয়ে স্বাক্ষর করাতে পারেন। 

নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র

আমি অনেকবার লক্ষ্য করেছি যে, অফিসে যে সকল ব্যক্তি ভোটার হতে আসে এবং আবেদনের সাথে যে প্রত্যয়ন পত্র জমা দেয় সেগুলোয় গতানুগতিক কিছু কথা ছাড়া আর তেমন কিছুই লেখা থাকে না। 

যেমন- এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, নাম মোঃ বেলাল শেখ, পিতা মোঃ ওলিউল ইসলাম, গ্রাম/মহল্লা, দাউদকান্দি, ডাকঘর, দাউদকান্দি, উপজেলা, কুষ্টিয়া সদর, জেলা কুষ্টিয়া কে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি ও জানি। তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী কোন কাজের সাথে জড়িত নন। তাকে নতুন ভোটার করার জন্য প্রত্যয়ন করছি।

আমি তাহার সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করি। 

ঠিক এমনই কিছু লাইন লিখে প্রত্যয়ন পত্র তৈরী করে অফিসে জমা দিয়ে থাকে। তবে যাই লেখা থাক না কেন প্রত্যয়ন পত্র জমা দিলেই অফিসে থেকে সেটা গ্রহণ করে নেয়। তাছাড়া আমি কখনো দেখিনি যে প্রত্যয়ন পত্র ভালো করে লেখা হয়নি বিধায় আবেদন জমা নেয়া হচ্ছে না। 

নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম

নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লেখার মধ্যে বেশি টেকনিক ফলো করার প্রয়োজন নেই। আপনি যে কাজের জন্য প্রত্যয়ন পত্র লিখবেন সেই বিষয়টা প্রত্যয়ন পত্রের মধ্যে সুন্দর করে উল্লেখ করে দিলেই হয়। অর্থাৎ প্রত্যয়ন পত্রের যে গতানুগতিক কথাগুলো সেগুলোর সাথে মূল বিষয়টা সুন্দর করে উল্লেখ করে দিতে হবে। 

আমার মতে নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্রটি নিম্নোক্তভাবে লেখা উচিত-

নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র

    এই মর্মে প্রত্যয়ন করা যাচ্ছে যে, নাম: মোঃ দাউদ খান, পিতা: মোঃ সোলেমান খান, গ্রাম/মহল্লা: উয়ালিপাড়া, ডাকঘর:  উয়ালিপাড়া. উপজেলা: নরসিংহহাটি, জেলা: কুড়িগ্রাম। তিনি আমার ওয়ার্ড/ইউনিয়নের একজন স্থায়ী বাসিন্দা। আমি তাকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনি ও জানি।  তিনি রাষ্ট্রদ্রোহী কোন কাজের সাথে জড়িত নন। তিনি ভোটার হওয়ার জন্য উপযুক্ত বয়স্ক ব্যক্তি। ইতোপূর্বে তিনি দেশের অন্য কোথায়ও ভোটার হননি। এই প্রথমবার নিজের স্থায়ী ঠিকানায় ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করছেন। আমি তাকে নতুন ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে নেয়ার জন্য প্রত্যয়ন করছি।


স্বাক্ষর


(মোঃ বসির শেখ)
সাধারণ সদস্য
২ নং উয়ালিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ
নরসিংহহাটি, কুড়িগ্রাম


[ বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরোক্ত প্রত্যয়ন পত্রে ব্যবহৃত নাম এবং ঠিকানার কোন সত্যতা নেই। এগুলো নমুনা তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ]

আপনারা চাইলে উপরোক্তভাবে মূল বিষয়টি উল্লেখ করে প্রত্যয়ন পত্র লিখে নিতে পারবেন। প্রত্যয়ন পত্র লেখার পর অবশ্যই সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে দিয়ে স্বাক্ষর করাবেন। 

পরিশেষে

পরিশেষে বলা যায় যে, নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম সহজ এবং তেমন কোন টেকনিক ফলো করার দরকার হয় না। শুধু গতানুগতিক কথাগুলোর সাথে মূল বিষয়টি উল্লেখ করে দিলেই হয়। আর আপনি চাইলে নিজেই প্রত্যয়ন পত্র লিখে নিয়ে এলাকার জনপ্রতিনিধকে দিয়ে স্বাক্ষর করাতে পারেন। অথবা জনপ্রতিনিধির অফিসে গিয়ে তাদের ব্যবহৃত প্যাডের উপর প্রত্যয়ন পত্র লিখে তিনে পারেন। 

এই ছিলো নতুন ভোটার প্রত্যয়ন পত্র লেখার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন। এ বিষয়ে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে জিজ্ঞাসা করবেন। আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করবো। লেখাটি যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ..!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন