দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বের করুন ২ মিনিটে

দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বের করার নিয়ম

ধরে নিচ্ছি আপনার কাছে জমির দাগ নাম্বার ছাড়া আর কোন তথ্য নেই। এখন ওই জমির মালিকের নাম কি বা কতজন মালিক আছে, জমিটির খতিয়ান নম্বর কত, সর্বমোট কতগুলো দাগ আছে ওই খতিয়ানে এ সকল তথ্য জানতে চান। কিন্ত শুধুমাত্র জমির দাগ নাম্বার আপনার কাছে রয়েছে এমতাবস্থায় কিভাবে দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বের করবেন?  আজকের এই পোস্টে সে বিষয়টি সম্পর্কে আপনাদের মাঝে বিস্তারিত তথ্য দেয়ার জন্য চলে আসলাম।

এ বিষয়ে যারা সঠিক তথ্য জানতে চান তারা সম্পূর্ণ লেখাটি পড়বেন, তাহলে খুব সহজে মাত্র এক থেকে দুই মিনিটের মধ্যে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে শুধুমাত্র দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বের করে নিতে পারবেন এবং মালিক কতজন মালিক রয়েছে সেটাও জানতে পারবেন।

Table of Contents

দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম জানতে যা কিছু লাগবে 

অনলাইন থেকে জমির মালিকের নাম যাচাই করার জন্য খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন হয় না। একটি মোবাইল অথবা কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ, ঠিকানা যেমন বিভাগ, জেলা, উপজেলা, মৌজা, খতিয়ানের ধরন, এবং জমির দাগ নম্বর এই তথ্যগুলো সঠিকভাবে দিতে পারলেই অনলাইন থেকে জমির মালিকের নাম বের করা সম্ভব হবে। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে অনলাইন থেকে জমির মালিকের নাম বের করা যায়।

দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বের করুন

অনলাইনের মাধ্যমে দাগ নাম্বার ব্যবহার করে জমির মালিকের নাম বের করার জন্য নিজের মোবাইল অথবা কম্পিউটার থেকে যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করে বাংলাদেশ ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট https://eporcha.gov.bd এ ভিজিট করতে হবে। তাহলে নিচের নমুনা ছবির মত একটি পেজ ওপেন হবে।

eporcha gov bd

এই পেজে আসার পর সার্ভে খতিয়ান এবং নামজারি খতিয়ান নামে দুটি অপশন পাবেন। আপনি যে খতিয়ানের তথ্য অনুসন্ধান করতে চান সেই খতিয়ানটি সিলেক্ট করবেন। আমি এখানে নামজারি খতিয়ান টি সিলেক্ট করছি। আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী দুইটি খতিয়ানের যে কোন একটি অপশন সিলেক্ট করবেন।

দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম

খতিয়ান সিলেক্ট করার সাথে সাথে নিচের দিকে একটি টেবিল দেখতে পাবেন। এই টেবিল থেকে ঠিকানা সিলেক্ট করতে হবে। প্রথমে বিভাগ সিলেক্ট করবেন, তারপরে জেলা, তারপরে উপজেলা, তারপরে খতিয়ানের ধরন সিলেক্ট করবেন। আমি আর এস খতিয়ান সিলেক্ট করছি। তারপর মৌজা সিলেক্ট করতে হবে এবং সর্বশেষ কলামে খতিয়ানের তালিকা দেখা যাবে।

যেহেতু আমাদের কাছে খতিয়ান নম্বর এবং মালিকের নাম নেই শুধুমাত্র জমির দাগ নম্বর  রয়েছে সেহেতু নিচের দিক থেকে অধিকতর অনুসন্ধান নামের বাটনটিতে ক্লিক করতে হবে। তাহলে সেখানে আরো দুটি অপশন দেখতে পাবেন একটি হচ্ছে মালিকের নাম অপরটি দাগ নং এখানে দাগ নম্বরের ঘরে আপনার কাছে থাকা দাগ নাম্বরাটি লিখে খুঁজুন বাটনে ক্লিক করবেন।

তাহলে ওই দাগ নাম্বরাটি যে খতিয়ানের মধ্যে রয়েছে সেই খতিয়ানটি চলে আসবে। এখন খতিয়ানের উপর ডাবল ক্লিক করতে হবে। তাহলে নিচের ছবির মত একটি পেজ আসবে।

খতিয়ানের দাগ নম্বর

এই পেজে খতিয়ান নম্বর দেখতে পাবেন এবং ওই খতিয়ানের মধ্যে যতগুলো জমির দাগ নাম্বার রয়েছে সেগুলো দেখা যাবে। তবে এখান থেকে মালিকের নাম দেখা যাবে না। মালিকের নাম দেখার জন্য বিস্তারিত বাটনে ক্লিক করতে হবে। তাহলে নিচের ছবির মত আরো একটি পেজ আসবে।

দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম

এই পেজে আসার পর খতিয়ানের সবগুলো দাগ নাম্বার দেখতে পাবেন। সেই সাথে মালিকের নাম দেখতে পাবেন। জমির মালিক একজন হোক বা দশ জন সকলের নামই দেখা যাবে। 

অনলাইনের মাধ্যমে দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বের করার এটাই নিয়ম। তাছাড়া যদি আপনি চান সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে গিয়ে দাগ নাম্বারের মাধ্যমে জমির মালিকের নাম জেনে আসতে পারেন। তবে আমি মনে করি অনলাইনে যদি দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম যাচাই করে দেখার সুযোগ থাকে তাহলে ভূমি অফিসে যাওয়া আসার কষ্ট না করা উচিত।

জমির খতিয়ান ডাউনলোড করার নিয়ম

জমির মালিকের নাম জানার পর যদি খতিয়ান তুলে নিতে চান। তাহলে নিচের দিকে থাকা খতিয়ান আবেদন বাটনে ক্লিক করে খতিয়ান উত্তোলনের জন্য আবেদন করতে হবে। খতিয়ান মূলত অনলাইন কপি হয়ে থাকে এবং সার্টিফাইড কপি হয়ে থাকে। খতিয়ান উত্তোলন করার জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি পরিশোধ করার প্রয়োজন হয়।

খতিয়ানের অনলাইন কপি তোলার জন্য ১০০ টাকা সরকারি ফি জমা দিতে হবে। আর যদি খতিয়ানের সার্টিফাইড কপি ডাকযোগে নিজের বাসায় পেতে চান তাহলে পোস্টাল ফি হিসেবে অতিরিক্ত ৪০ টাকা জমা দেয়া লাগতে পারে। এক্ষেত্রে পাঁচ থেকে সাত দিনের মতো সময় লাগবে খতিয়ানটি আপনার বাসায় পৌঁছাতে।

 পরিশেষে

পরিশেষে বলা যায় যে দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম বের করার জন্য অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। অনলাইন থেকে নিজে নিজেই কাজটি করা যায়। এ বিষয়ে যারা জানতেন না তারা এই পোস্টটি পড়ার পর আশা করি বিস্তারিত বুঝতে পারবেন কিভাবে কাজটি করতে হয়।

এই ছিল অনলাইন থেকে দাগ নাম্বার জমির মালিকের নাম বের করার নিয়ম। আশা করি বিস্তারিত বুঝাতে পেরেছি। এ বিষয়ে যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করবেন আপনাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে চেষ্টা করবো। লেখাটি যদি ভালো লাগে তাহলে অন্যদের মাঝে শেয়ার করার অনুরোধ রইলো। ধন্যবাদ..!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন