Bangladesh Nid Application System কতটা নিরাপদ?

Bangladesh Nid Application System

আপনার Nid Account এ অন্য ব্যক্তি সহজেই প্রবেশ করবে কিন্ত আপনি জানতেও পারবেন না। মনোযোগ দিয়ে পড়ুন বিস্তারিত জেনে চোখ কপালে উঠে যাবে! আপনি হয়তো জেনে থাকবেন Nid Card এর প্রায় অধিকাংশ সেবা এখন অনলাইন থেকে পাওয়া যায়। Bangladesh Nid Application System এর ওয়েবসাইট https://services.nidw.gov.bd ভিজিট করে নতুন ভোটারের জন্য আবেদন করা যায়, এনআইডি কার্ড সংশোধনের আবেদন করা যায়, এনআইডি রিইস্যু আবেদন করা যায়, স্মার্ট এনআইডি স্ট্যাটাস চেক এবং নতুন ভোটারদের Nid Card Download করা যায় ইত্যাদি। 

এই সেবাগুলো নিজ নিজ এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করে নিতে হয়। কিন্ত অন্য কোন ব্যক্তি কি আপনার এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করে Nid Card Download করতে বা Nid রিইস্যু আবেদন করে নতুন একটি Nid Card তুলে নিতে পারবে? আপনি তো ভাবছেন পারবে না। কিন্ত আমি বলছি অবশ্যই পারবে এবং এটা কোন ব্যাপারই না। চলুন জেনে নেই কিভাবে সম্ভব!

Table of Contents

Bangladesh Nid Application System এর নিরাপত্তা

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জনগণকে সহজে Nid Seba দেয়ার জন্য Nid Application System টি তৈরী করেছে। একজন ভোটারের ব্যক্তিগত তথ্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং সেনসিটিভ সেটা আমরা সবাই জানি। তাই নির্বাচন কমিশনও আবেদনকারীর ফেস স্ক্যানের মাধ্যমে https://services.nidw.gov.bd সাইটের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

অর্থাৎ, এনআইডি একাউন্ট তৈরী করতে হলে অবশ্যই আবেদনকারীর সম্মতিতে করতে হবে এবং তাকে সেখানে উপস্থিত থাকতে হবে যাতে Nid Wallet App এর মাধ্যমে তার মুখ/ফেস স্ক্যান করা যায়। ফেস স্ক্যান ছাড়া কোন ভাবেই এনআইডি একাউন্ট তৈরী করা যায় না। একাউন্ট তৈরীর সময় চাইলে পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে একাউন্টটিকে আরো সুরক্ষিত করা যায়।

কিন্ত দেখা যায় যে, শুধুমাত্র কোন ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং  জন্ম তারিখ হলেই তার এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করা যাচ্ছে। তাতে আবেদনকারী সেখানে উপস্থিত না থাকলেও সমস্যা নেই। আপনার হয়তো বিশ্বাস হচ্ছে না, কিন্ত তথ্যটা একদম সত্যি। আমি নিজে চেষ্টা করে দেখেছি। যাকে আমি চিনিও না শুধু আইডি নম্বর এবং জন্ম তারিখ পেয়েছি এবং তার একাউন্টে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছি। কি একটা সাংঘাতিক বিষয় দেখেছেন! 

যদি সত্যি যে কোন ব্যক্তি আইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে তার এনআইডি একাউন্ট প্রবেশ করা যায় তাহলে কিভাবে বলি Bangladesh Nid Application System এর নিরাপত্তা অনেক ভালো.!

Bangladesh Nid Application System কিভাবে প্রবেশ করা যায়

আমি যখন অন্য ব্যক্তির এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করতে পেরেছি তখন আপনিও পারবেন। এখানে যাদু-মন্ত্রের প্রয়োজন নেই। শুধু সামান্য একটু টেকনিক অনুসরণ করলেই কাজটি করা যায়। আর এই সামান্য টেকনিকের মাধ্যমে যদি আমি আপনার এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করে আপনার Nid Card Download করে নেই কিংবা রিইস্যুর আবেদন করে যদি আপনার এনআইডি কার্ড তুলে নেই আর আপনি এ বিষয়ে কিছুই জানতে না পারেন তাহলে বিষয়টি কেমন হলো?

Nid Application System এ প্রবেশ করতে কি কি লাগবে

সাধারণভাবে একটি এনআইডি একাউন্ট তৈরী করতে হলে যা কিছু লাগে এ ক্ষেত্রেও সেগুলোই লাগবে। শুধু একটি অ্যাপ অতিরিক্ত ব্যবহার করতে হবে। যেমন-

  • আবেদনকারীর এনআইডি নম্বর
  • আবেদনকারীর জন্ম তারিখ
  • আবেদনকারীর ঠিকানা
  • একটি মোবাইল নম্বর
  • Nid Wallet App
  • Avatar SDK Showcase App
  • দুইটি স্মার্ট ফোন

যে কোন ব্যক্তির এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করার জন্য উপরোক্ত তথ্যগুলো অবশ্যই লাগবে। তবে শুধু আবেদনকারীর এনআইডি নম্বর এবং জন্ম তারিখ পাওয়া গেলে বাকী কাজগুলো আপনি নিজেই করতে পারবেন। 

যেভাবে Nid Application System এ প্রবেশ করবেন

প্রথমে একটি মোবাইলে Nid Wallet App ইনিস্টল করে নেবেন। অপর মোবাইলে Avatar SDK Showcase App ইনিস্টল করতে হবে। Avatar SDK Showcase App গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া নাও যেতে পারে। তাই সরাসরি গুললে Avatar SDK Showcase App APK Download লিখে সার্চ করলে অ্যাপটি পেয়ে যাবেন। সেটি ডাউনলোড করে মোবাইলে ইনিস্টল করে নিতে হবে।

ধরে নিচ্ছি আমাদের কাছে এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখ রয়েছে। এখন প্রয়োজন আবেদনকারীর ছবি এবং ঠিকানা। যে কোন ব্যক্তির Nid Card এর অরিজিনাল ছবি ও ঠিকানা পাওয়ার একটি উপায় রয়েছে। অনলাইন থেকে Nid Card Check করার উপায় রয়েছে এবং উক্ত উপায়ে এনআইডি কার্ড চেক করে যে কোন ব্যক্তির ছবি ও স্থায়ী ঠিকানা পাওয়া সম্ভব। আমাদের ওয়েবসাইটে অনলাইন থেকে Nid Card Check করার নিয়ম সম্পর্কে একটি পোষ্ট করা আছে প্রয়োজনে দেখে নিতে পারেন।

এনআইডি কার্ড চেক করে ছবি ও ঠিকানা পাওয়ার পর https://services.nidw.gov.bd সাইটে গিয়ে নরমালি যেভাবে এনআইডি একাউন্ট তৈরী করতে হয় সেভাবেই একাউন্ট তৈরী করার চেষ্টা করতে হবে।

যখন ফেস ভেরিফাই করার অপশন আসবে। তখন অপর মোবাইল যেটাতে Avatar SDK Showcase App ইনিস্টল করা আছে। ওই মোবাইল থেকে অ্যাপটি ওপেন করবেন এবং আবেদনকারীর ছবিটি অ্যাপের মধ্যে ওপেন করলে সেটা হুবহু মানুষের মুখের মত দেখাবে। সেই সাথে ফেস ডানে, বামে, উপরে, নিচে ঘোরানো সম্ভব হবে। তখন Nid Wallet App দিয়ে ফেস স্ক্যান করে নিতে হবে। 

এই পদ্ধতিতে অবশ্যই ফেস স্ক্যান হবে। আর ফেস স্ক্যান হলে একউন্ট রেজিস্ট্রারের পরবর্তী ধাপে চলে যাবে। অন্য কোন ব্যক্তির এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করার সব থেকে বড় বাধা হচ্ছে ফেস স্ক্যানের বিষয়টা। যা এই উপায়ে সহজেই করে ফেলা যায়। 

Bangladesh Nid Application System এর আরো দূর্বলতা

আপনি হয়তো ভাবছেন আপনার এনআইডি একাউন্ট আগেই রেজিস্ট্রার করা আছে এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত করা আছে। কেউ আপনার একাউন্টে গিয়ে রেজিস্ট্রার করতে পারবে না। কিন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে কি জানেন? যতই আপনার একাউন্ট আগে রেজিস্ট্রার করা থাক এবং পাসওয়ার্ড দেয়া থাক তারপরেও সেই একাউন্টে পুনরায় রেজিস্ট্রেশন করা যায়।

Bangladesh Nid Application System এর এটা আরো একটি দূর্বলতা। যদি কোন এনআইডি একাউন্ট পূর্বে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে সেই এনআইডি নম্বর দিয়ে পুনরায় রেজিস্ট্রেশন হওয়ার কথা না। কিন্ত তারপরও দেখা যায় রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে। তাহলে কি বলবেন? এটা অবশ্যই Nid System এর বড় একটা দূর্বলতা।

Nid System এর নিরাপত্তা বাড়াতে করণীয়

আমার ব্যক্তিগত অভিমত এটাই যে, শুধুমাত্র ফেস স্ক্যান এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে একাউন্ট সুরক্ষতি রাখার পাশাপাশি আরো একটি অপশন যুক্ত করা যেতে পারে। তা হচ্ছে বায়োমেট্রিক ভেরিফাই করার অপশন। কারণ এখন অধিকাংশ মোবাইলে ফিংগার প্রিন্ট সেন্সর থাকে। 

আবেদনকারী Nid একাউন্ট তৈরী করার সময় Nid Wallet এর মাধ্যমে তার ফেস স্ক্যান করার পাশাপাশি হাতের ছাপ দিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য ভেরিফাই করবে। তাহলে হয়তো একজনের Nid একাউন্টে অন্য কোন ব্যক্তির প্রবেশ বন্ধ করা সম্ভব হবে। 

পরিশেষে

পরিশেষে বলা যায় যে, Bangladesh Nid Application System এর নিরাপত্তা আরো বৃদ্ধি করার জন্য কর্তৃপক্ষের এদিকে নজর দেয়া উচিত। যাতে কোন অসৎ ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে অন্য কোন ব্যক্তির এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করতে না পারে। কারণ প্রতিটি ভোটারের তথ্যই অত্যন্ত সেনসিটিভ। কর্তৃপক্ষ এই ভোটার তথ্যের নিরাপত্তা বৃদ্ধি না করলে হয়তো অনেক সাধারণ মানুষ কিছু অসাধু ব্যক্তির দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। 

আমি এই পোষ্টে Bangladesh Nid Application System এর নিরাপত্তা সম্পর্কে যে তথ্য আপনাদের মাঝে দিয়েছি তা কেমলমাত্র আপনাদের অবগত করার জন্য। তাছাড়া কোন ভাবেই অন্য কোন ভোটারের এনআইডি একাউন্টে প্রবেশ করে অসৎ কাজ করার জন্য উৎসাহিত করছি না।

এই ছিলো Bangladesh Nid Application System এর কিছু দূর্বলতা। আশা করি আপনারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্টস করবেন। লেখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন। ধন্যবাদ..!

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন